পোষ্টটি পড়ে আপনাদের মতামত জানাবেন,
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিচ্ছিন্ন করার
ষড়যন্ত্র পাকাপোক্ত!!!
৬ জন তরুণ অফিসার, ১ মেজর, ৩
ক্যাপ্টেন
ও ২ লেফটেন্যান্ট পার্বত্য
চট্টগ্রামে
শান্তিবাহিনীর সাথে যুদ্ধে শহীদ
হয়েছিলেন। ৩১২ জন সৈনিক পার্বত্য
চট্টগ্রামে তাদের জীবন
দিয়েছেন।
পার্বত্য চট্টগ্রামের কয়েক হাজার
কিলোমিটার রাস্তার অর্ধেকের
বেশী
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক
নির্মিত। নৈসর্গিক সৌন্দর্য
উপভোগ
করার জন্য দেশী-বিদেশী হাজার
হাজার পর্যটক নীলগিরিসহ পার্বত্য
চট্টগ্রামের যেসব স্পটে ছুটে যান
তার
পুরো অবদানটাই সেনাবাহিনীর।
নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ ও রাস্তা
নির্মাণ না করা হলে রাতে
থেকে
নৈসর্গিক সৌন্দর্য উপভোগ করা
দূরের
কথা, এখানে কেউ যাওয়ার
কল্পনাও
করতেন না।
পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে কাজ করছেন
এমন
একজন বিশেষজ্ঞ বলেন, পার্বত্য
চট্টগ্রামকে বিচ্ছিন্ন করার যে
গভীর
ষড়যন্ত্র চালানো হচ্ছে তার প্রভাব
পড়বে দেশের প্রধান সমুদ্র বন্দর
চট্টগ্রামে। একই সাথে পৃথিবীর বৃহৎ
সমুদ্র
সৈকত কক্সবাজারও এ থেকে রক্ষা
পাবে না।
তিনি বলেন, ভারতের স্বার্থে সন্তু
লারমাদের রক্ষায় একটি
প্রভাবশালী
মহল সক্রিয় রয়েছে। তারা পার্বত্য
চট্টগ্রামে সেনাবাহিনীকে দুর্বল
করার
জন্য মাঠে নেমেছে। সেনা ক্যাম্প
তুলে
আনা এটি তারই অংশ। বাংলাদেশ
সেনাবাহিনী রাস্তা মেরামত
কিংবা
ব্রীজ রক্ষার কাজ না করে দেশের
ভূখ-
রক্ষায় সক্রিয় হতে হবে। দেশের
স্বাধীনতা সংগ্রামসহ
আন্তর্জাতিক
অঙ্গনে আমাদের সেনাবাহিনীর
যে
বীরত্বের অবদান ও সুনাম রয়েছে
তা
আরো বাড়িয়ে তোলার দায়িত্ব
তাদেরই
নিতে হবে।
মেজর জেনারেল (অব:) এম এ মতিন,
বীর
প্রতীক, পিএসসি দৈনিক
ইনকিলাবকে
বলেন, নৈসর্গিক সৌন্দর্য ও
প্রাকৃতিক
সম্পদে ভরপুর পার্বত্য চট্টগ্রামের
শান্তি
ফিরিয়ে আনতে বাংলাদেশ
সেনাবাহিনীর শত শত অফিসার ও
সদস্যকে প্রাণ দিতে হয়েছে।
আমরা
শান্তি বাহিনীর সাথে যখন যুদ্ধ
করেছি
তখন কোন ক্যাম্প কেউ দখল করতে
পারেনি। শান্তি চুক্তির ফলে
পার্বত্য
চট্টগ্রামের কর্তৃত্ব হারানো
হয়েছে।
তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের
সমস্যা
এখন রাজনৈতিকভাবে
মোকাবেলা
করতে হবে। বাঙালীদের স্বার্থও
দেখতে
হবে। পাহাড়ে শান্তি বজায়
রেখে
বাঙালী-পাহাড়িরা যাতে
বসবাস করতে
পারে সেজন্য সরকারকে পদক্ষেপ
নিতে
হবে। এ দেশের মানুষ পার্বত্য
চট্টগ্রামকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলার
ষড়যন্ত্র রুখে দাঁড়াবে এবং তারা
এটা
কখনো মেনে নেবে না।
পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে দীর্ঘদিন
ধরে
কাজ করছেন এমন একজন গোয়েন্দা
কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে
দৈনিক
ইনকিলাবকে বলেন, ১৯৭৪ সাল
থেকে
সেনাবাহিনী পার্বত্য চট্টগ্রামের
তিন
জেলায় শান্তি প্রতিষ্ঠান জন্য
কাজ
করছে। এতে করে অনেক সেনা সদস্য
ও
কর্মকর্তাকে প্রাণ পর্যন্ত দিতে
হয়েছে।
শান্তি চুক্তির পর থেকে এ পর্যন্ত
২৩৮টি
সেনা ক্যাম্প প্রত্যাহার করা
হয়েছে।
বর্তমানে ২শ’ ৫৩টি সেনাক্যাম্প
রয়েছে।
তিনি বলেন, সেনাক্যাম্প
প্রত্যাহার
করায় অস্ত্র ও মাদক ব্যবসা বেড়ে
গেছে
এবং পাহাড়ি সশস্ত্র গ্রুপগুলো
সক্রিয়
হয়ে উঠেছে। এখন গুলি ও
চাঁদাবাজির
ঘটনা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।
প্রকৃতিগত কারণেই স্থানীয়
প্রশাসনের
পক্ষে পাহাড়ি সন্ত্রাসী
গ্রুপগুলোকে
নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয় না। গভীর
জঙ্গল
ও যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকার
পরেও
সেনা বাহিনী ঝুঁকি নিয়ে
দেশের জন্য
কাজ করে আসছে।
ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, বান্দরবান,
খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটির ভারত
ও
মায়ানমার সীমান্ত এলাকার
যোগাযোগ
ব্যবস্থা ভাল। ফলে সীমান্ত দিয়ে
সহজেই বিচ্ছিন্নতাবাদী গ্রুপগুলো
বাংলাদেশ ভূখ-ে প্রবেশ করতে
পারে।
অন্যদিকে আমাদের দিক থেকে
গভীর
অরণ্য ও রাস্তা না থাকায় এদের
শনাক্ত
করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা কঠিন। তার
উপর
সেনাক্যাম্প কমিয়ে দেয়ায় বড়
ধরনের
সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে বলে তিনি
মন্তব্য
করেন।
বিশেষষজ্ঞরা বলছেন, পার্বত্য
চট্টগ্রাম
ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন
২০১৩
বাস্তবায়ন হলে ওই অঞ্চলে বসবাসরত
৮
লাখের অধিক বাঙালীর ভূমি-
সংক্রান্ত
জটিলতা বাড়বে। একই সাথে
পার্বত্য
জেলা বান্দরবান, খাগড়াছড়ি ও
রাঙ্গামাটিতে বাঙালী-
পাহাড়িদের
মধ্যে সংঘাত চরম আকার ধারণ করবে।
পাহাড়িদের স্বার্থ রক্ষার
একপেশে
আইনটি বাতিলের দাবিতে
পার্বত্য
চট্টগ্রামের জনপদ উত্তাল হয়ে
উঠলেও
সরকার কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
এর
ফলে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে
বসবাসরত
লাখ লাখ বাঙালী হবে নিজ
দেশে
পরবাসী এমন মন্তব্য বিশেষজ্ঞদের।
তারা বলছেন, পাহাড়ে সশস্ত্র
বিদ্রোহ
অবসানের লক্ষ্যে ১৯৯৭ সালের ১
ডিসেম্বর সরকার ও পার্বত্য চট্টগ্রাম
জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) মধ্যে
যে
চিন্তা মাথায় রেখে পার্বত্য
চুক্তি
স্বাক্ষরিত হয় পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি
বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন ২০১৩
বাস্তবায়ন হলে তা বাধাগ্রস্ত হবে।
একটি দায়িত্বশীল সূত্রে জানা
গেছে,
পার্বত্য চট্টগ্রামে তিন জেলায়
বিপুল
পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র ভা-ার গড়ে
তুলেছে
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির
(জেএসএস) সন্তু লারমা গ্রুপ এবং
ইউপিডিএফয়ের সশস্ত্র ক্যাডাররা।
একই
সাথে ওই অঞ্চলে ভারত ও
মায়ানমারের
মাদক ব্যবসায়ী চক্রের সাথে হাত
মিলিয়ে মাদক ব্যবসা চালিয়ে
যাচ্ছে।
সেনাবাহিনী আগের মতো সক্রিয়
না
থাকায় (সেনাক্যাম্প তুলে
ফেলায়)
আসাম, ত্রিপুরা, নাগাল্যান্ড,
মেঘালয় ও
মায়ানমারের বেশ কিছু
বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র গ্রুপ
আস্তানা
গড়ে তুলেছে জেএসএস এবং
ইউপিডিএফয়ের মদদে। এর মধ্যে
রয়েছে-
আসামের উলফা ও আদিবাসী
পিপলস
আর্মি। ত্রিপুরার ন্যাশনাল ফ্রন্ট অব
ত্রিপুরা। মেঘালয়ের গাড়ো
ন্যাশনাল
লিবারেশন আর্মি এবং
মায়ানমারের
বিচ্ছিন্নতাবাদী গ্রুপ।
অনুসন্ধানে জানা গেছে,
বাঙালি শূন্য
করে পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি
জনশক্তি বৃদ্ধির জন্য ভারতীয়
উপজাতীয়দের এনে পার্বত্য
চট্টগ্রামে
পাহাড়ি জনসংখ্যা বৃদ্ধির কাজ
চলছে।
পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাবাহিনীর
তৎপরতা শিথিল হওয়ায় এবং কোন
কোন
এলাকায় তাদের কোন তৎপরতা না
থাকার সুযোগে ভারতীয়
উপজাতীয়
নাগরিকদের এনে নতুন করে বসতি
গড়ার
সুযোগ দেয়া হচ্ছে। ভয়-ভীতি-প্রদর্শ
ন,
অগ্নিসংযোগ, হত্যা ইত্যাদি
সত্ত্বেও
বাঙালি মুসলমান পরিবারগুলো
পার্বত্য
চট্টগ্রামের আবাসস্থল পরিত্যাগ না
করলে তাদের রেশন ও প্রোটেকশন
প্রত্যাহার করার জন্য একটি চক্র হুমকি
দিচ্ছে বলে বাঙালীদের পক্ষ
থেকে
অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সূত্র মতে, ভারতের মিজোরাম ও
ত্রিপুরা
থেকে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে
আত্মীয়তার
সূত্র ব্যবহার করে বাঘাইছড়ি ও
সাজেক
এলাকার সংরক্ষিত বনাঞ্চলে
বসতি
স্থাপন করার সুযোগ করে দেয়া
হচ্ছে।
বিভিন্ন সংস্থা ও এনজিও এসব
নবাগত
ভারতীয় উপজাতীয় পরিবারের
থাকা-
খাওয়ার সার্বিক ব্যবস্থাপনার
দায়িত্ব
নিয়েছে।